জলময় শিবলিঙ্গ আছে সেই স্থানে।
‘অম্বুলিঙ্গ-ঘাট’ করি’ বলে সর্বজনে।
অধুনা তথায় শ্রীগৌরজন্মস্থান শ্রীধাম মায়াপুরের শ্রীচৈতন্যমঠের অধ্যক্ষের ও সেবকগণের প্রচেষ্টায় শ্রীগৌরপাদপীঠের মন্দির নির্মিত হইয়াছে।
অম্বুলিঙ্গ—অধুনা এই স্থানটি ভূম্যধিকারী শ্ৰীযুত বরদাকান্ত রায়চৌধুরী মহাশয়ের অধিকারে বর্তমান। এই স্থানে অদ্যাপি শৈবালাবৃত গঙ্গাজল অন্তর্নিহিত আছে।
তথ্য। ছত্রভোগ—২৪ পরগণার ৪১ নং মৌজা ছত্রভোগ মথুরাপুর থানার অন্তর্গত—ই, বি, রেলওয়ের মথুরাপুর রোড্ ষ্টেশন হইতে প্রায় ৪।।০ মাইল। এখানে ত্রিপুরাসুন্দরী মহামায়ার মন্দির আছে। ত্রিপুরাসুন্দরীর স্থান হইতে অম্বুলিঙ্গের স্থান প্রায় ১/০ মাইল। অম্বূলিঙ্গস্থানের বর্তমান নাম ‘বড়াসী’ গ্রাম। ইহা ৪৩ নং বাদে বড়াসী মৌজা, মথুরাপুর থানার অন্তর্গত। বড়াসী গ্রামের পূর্বদিকে শ্ৰীমন্মহাপ্রভুর আগমন-কালে গঙ্গা শতমুখী হইয়া প্রবাহিতা ছিলেন। এখন শতমুখী গঙ্গা প্রকটিত না থাকিলেও তাঁহার অবশেষ-চিহ্ন খাতাদি দৃষ্ট হইয়া থাকে। এই স্থানে অম্বুলিঙ্গের মন্দির বর্তমান রহিয়াছে। স্থানীয় ব্যক্তিগণের নিকট অনুসন্ধানে জানা গেল, পূর্বে তারকেশ্বরের মহান্ত শ্রীযুক্ত সতীশ গিরির অধীনে এই মন্দির ও দেবোত্তর জমিদারী ছিল, বর্তমানে নানা মামলা-মোকদ্দমার পর তাহা কাশীনগরের জমিদার শ্রীযুক্ত বরদাপ্রসাদ রায় চৌধুরীর জমিদারীতে পরিণত হইয়াছে।।
মন্দিরের মধ্যে অম্বুলিঙ্গ-শিব বিরাজিত রহিয়াছেন। গৌরীপট্টকার একটী পাষণময় খাতের মধ্যে জল রহিয়াছে; তন্মধ্যেই অম্বুলিঙ্গ বিরাজ করিতেছেন। লিঙ্গ-ললাটমধ্যে রৌপ্যময় অর্ধচন্দ্র শোভা পাইতেছে। উপরিভাগে শ্রীলক্ষ্মীনারায়ণ ও শ্রীগোপাল বিগ্রহ আছেন। এই অম্বুলিঙ্গ স্থান হইতে প্রায় দশ রশি পূর্বদক্ষিণ-দিকে ‘চক্ৰতীর্থা’-নামক স্থান। এই স্থানেই প্রাচীন গঙ্গা প্রবাহিতছিল বলিয়া স্থানীয় জনশ্রুতি। এখন গঙ্গার অবশেষরূপে একটী পুষ্করিণী দৃষ্ট হয়। এখানে মাধব বিষ্ণু-মূর্তি আছেন। মেলার সময় লোকে ঐ পুকুরে গঙ্গাস্নান করিয়া থাকে এবং চক্ৰতীর্থে পূজাদি দেয়। গত ১১ই জ্যৈষ্ঠ (১৩৩৭), ২৫শে মে (১৯৩০) বহু বৈষ্ণব-সমভিব্যাহারে শ্রীশ্রীচৈতন্যচরণচিহ্নস্থাপনের স্থান নির্দেশের উদ্দেশ্যে আমরা ছত্ৰভোগ দর্শন করি। বিস্তৃতবিবরণ ‘গৌড়ীয়’ ৮ম বর্ষ, ৪২ সংখ্যায় দ্রষ্টব্য।