না মানে’ চৈতন্য-পথ বোলায় ‘বৈষ্ণব।
শিবেরে অমান্য করে ব্যর্থ তা’র সব।
বিবৃতি। গুণাবতার মহাদেবকে যাহারা অসম্মান করে, তাহারা শ্রীচৈতন্যের প্রকৃত প্রস্তাবে অনুসরণ করে না। শ্রীচৈতন্যের প্ৰকটকালের প্রায় চতুঃশতাব্দিপূর্বে শ্রীরামানুজ ঐকান্তিক বৈষ্ণবধর্মের প্রচার করিয়াছিলেন। চিজ্জড়সমন্বয়বাদিগণ গুণাবতারের সহিত বাসুদেব বিষ্ণুর সমত্ব-স্থাপনের যথেষ্ট যত্ন করেন। তৎফলে তাঁহারা ভগবচ্চরণে অপরাধী হওয়ায় সেই অপরাধ হইতে তাঁহাদিগকে মুক্ত করিবার বাসনায় শ্রীলক্ষ্মণদেশিক একলা বিষ্ণুভক্তির কথা প্রবলভাবে স্থাপন করেন। শ্রীআনন্দতীর্থান্ত বৃদ্ধ বৈষ্ণবগণ বিরিঞ্চি শিবাদি গুণাবতারগণকে ভগবদ্ভক্ত-বিচারে পূজা করেন। শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য ভক্তাবতার শিবের আলয়ে গিয়া কৃষ্ণভক্তি প্রার্থনা করিয়াছেন। কিন্তু শ্রীচৈতন্যাশ্রিত জনগণ যদি শ্রীরামানুজীয় ঐকান্তিক বিচারে ভক্তরাজ মহাদেবের অনাদর করেন, তাহা হইলে ভক্তবিদ্বেষ-জন্য গ্রন্থকারপ্রমুখ সকল শুদ্ধভক্তগণের ভক্তদ্বেষীর প্রতি ক্রোধের উদয় হয়। “শিব-বিরিঞ্চিনুতঃ শরণ্যম্” “দাসাস্তে হরনারদপ্রভৃতয়ঃ” “বৈষ্ণবানাং যথা শম্ভঃ”; স্বয়ম্ভূ আদি দ্বাদশ বৈষ্ণবের শ্রেষ্ঠ এবং ‘বিষ্ণুস্বামী’ নামক বৈষ্ণবসম্প্রদায়ের আদিগুরু শ্রীশিবের শ্রেষ্ঠ-বৈষ্ণবত্ব-বিচারের অনাদর ঘটে। শৈব বা লিঙ্গায়েদ্গণ বৈষ্ণবদিগকে অযথা আক্রমণ করায় তাঁহারা শৈবগণপূজিত শিবমন্দিরে গমন করিয়া শিব-দর্শনে ‘স্বজাতীয়াশয়স্নিগ্ধ’ সাধুর সঙ্গবর্জিত হইয়াছেন বলিয়া মনে করিতেন। শ্রীচৈতন্যের অনুগত জনগণ তাহা করেন না।
তথ্য। যঃ পরঃ রহসঃ সাক্ষাৎ ত্রিগুণাজ্জীবসংজ্ঞিতাৎ। ভগবন্তং বাসুদেবং প্রপন্নঃ স প্রিয়ো হি মে।। (ভাঃ ৪/২৪/২৮) নাশ্চর্যমেতদ্যদসৎসু সর্বদা মহদ্বিনিন্দা কুণপাত্মবাদি্যু। সের্ষ্যং মহাপুরুষপাদপাংশুভি নিরস্ততেজঃসু তদেব শোভনম্।। যদ্দ্বাক্ষরং নাম গিরেরিতং নৃণাং সকৃৎ প্রসঙ্গাদঘমাশু হন্তি তৎ। পবিত্রকীর্তিং তমলঙ্ঘ্য্শাসনং ভবানহো দ্বেষ্টি শিবং শিবেতরঃ ।। (ভাঃ ৪/৪/১৩-১৪)।