দানী বলে,-“গোসাঞি, করহ শুভ তুমি।
এ-সবার দান পাইলে ছাড়ি’দিব আমি।”
বিবৃতি। পুরাকালে জমিদারের মহালের মধ্যে পথে চলিতে হইলে দানী-সকল ঘাট সমাধান-কারীর নিকট হইতে শুল্ক আদায় করিত। শ্রীগৌরসুন্দর যখন ছয়জন ভক্তসহ যাইতেছিলেন, তখন তাঁহার কোন সম্বল ছিল না। ঘাট-সমাধানেরও অর্থ কাহারও সহিত না থাকায় সকলেই আপনাদিগকে শ্রীগৌরসুন্দরের আশ্রিত-জ্ঞানে চলিতেছিলেন। এক দানী হরিশ্চন্দ্রের পুত্রের মৃত্যুতে শ্মশানশুল্ক আদায় করিবার বিচারের ন্যায় গৌরসুন্দরের নিকটও পথ-শুষ্ক চাহিয়া বসিল। পথ-শুল্ক না দেওয়া পর্যন্ত কাহাকেও জগন্নাথের পথে চলিতে দিবে না বলিয়া দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইল। মহাপ্রভুর অলৌকিক শ্রীবিগ্রহদর্শনে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিল—“আপনার সঙ্গে আপনি ব্যতীত আর কয়জন আছেন?” প্রভু তদুত্তরে বলিলেন,—“আমি জাগতিক লোকগুলির সম্বন্ধ হইতে সন্ন্যাস গ্রহণ করিয়াছি। সুতরাং বিশ্ববাসী কেহই আমার লোক নহে বা আমিও বিশ্ববাসী লোকের অন্যতম নহি;। আমি ‘একমেবাদ্বিতীয়ম্’ বস্তু; সকল বিশ্বই আমার।’’ দানী তদুত্তরে তাঁহার অবিরল অশ্রুধারাপাত দর্শন করিয়া বলিল— “কেবল আপনারই শুল্ক দিতে হইবে না, বাকী সকলেরই দিতে হইবে।’’