ভিক্ষা দ্রব্য দেখি’ সবে লাগিলা হাসিতে।
সবেই বলেন “প্রভু, পারিবা পোষিতে।”
বিবৃতি। অধুনা শ্রীচৈতন্যমঠ ও তাঁহার বিভিন্ন শাখামঠসমূহ নানা ব্যক্তির নিকট হইতে ভিক্ষার দ্রব্য সংগ্রহ করিয়া বৈষ্ণবসেবা করিয়া থাকেন। শ্রীগৌরসুন্দর নিজগণের দ্বারা ভিক্ষা সংগ্রহ করাইয়া এবং স্বয়ং ভিক্ষা করিয়া নিজগণের পোষণ বা বৈষ্ণব সেবন-লীলা প্রদর্শন করিয়াছিলেন। শ্রীগৌড়ীয়মঠের ভিক্ষুকগণকে অনেকেই ভিক্ষা দেন দেখিয়া মৎসর ঈর্ষান্বিত সম্প্রদায় তাঁহাদের প্রতি দৌরাত্ম্য করিলেও “গৌড়ীয়মঠের দ্বারাই যে শ্রীগৌরসুন্দরের প্রচারিত প্রেমধর্মের সংরক্ষণ -কার্য সর্বক্ষণ সাধিত হইতে পারে”—এ কথা বলিতে পশ্চাৎপদ হয় না। এক নিন্দুক পাষণ্ডী ইহাও মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিয়াছে যে,—“গৌড়ীয় মঠের বিভিন্ন দেশে প্রচার-প্রণালীই গৌরসুন্দরের প্রবর্তিত পথ। গৌড়ীয়মঠই প্রকৃত প্রস্তাবে গৌরসুন্দরের সুষ্ঠু প্রচারকার্যে সাফল্য লাভ করিয়াছেন।’’ পাষণ্ডী নিন্দক সহজিয়াগণের মুখেও এই সকল কথা অস্বীকৃত হইতে পারে না। প্রাকৃত-সহজিয়ার কৃত্রিম বৈষ্ণবাচার ও প্রণালী যদিও গৌড়ীয়মঠের সেবকগণ অনুমোদন করেন না এবং তাহাদের বিরোধ-কার্যে সহজিয়াগণের চেষ্টা থাকিলেও উহারা গৌড়ীয় মঠের প্রচারকগণকে সমগ্রজীবের মঙ্গলকামনা বিচারে মহাপ্রভুর একমাত্র অনুগত বলিয়া মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করেন। শ্রীগৌরসুন্দর যে প্রকার ভক্তগণ-পালক হইয়া তাহাদের পরমার্থ-পোষণ ও বিঘ্নবিনাশন-কার্যে নিযুক্ত ছিলেন, তাঁহার ভৃত্যগণও তাঁহারই সেবার জন্য বর্তমানে সেই কার্যেই নিযুক্ত—একথা প্রাকৃত-সাহজিকমিছাভক্ত-বৈষ্ণবব্ৰুব সম্প্রদায় বুঝিয়া উঠিতে পারে না।