কূলেতে উঠিলে বাঘে লইয়া পলায়।
জলেতে পড়িলে কুম্ভীরেতে ধরি’ খায়।
বিবৃতি। রামচন্দ্র খাঁনের নৌকায় শ্রীগৌরসুন্দর আরোহণ করিলে মুকুন্দ কৃষ্ণকীর্তন করিতে লাগিলেন। তখন মূঢ় নৌকা চালক নিজের বিনাশ অবশ্যম্ভাবী জানিয়া মহাত্রাসান্বিত হইল। দুর্গম সুন্দরবনের ভিতর দিয়া যাইতে গেলে স্থলপথে ব্যাঘ্র ও জলে বহু কুম্ভীরের সমাবেশ দেখা যাইত। এতদ্ব্যতীত ঐ জলপথে বহু জলদস্যু লুট ও রাহাজানি করিয়া বেড়াইত। তজ্জন্য নাবিক সকলকে কৃষ্ণকীর্তন করতে নিষেধ করিয়াছিল। নাবিকের ত্রাসের অন্য কারণ এই যে,রামচন্দ্র খাঁনের আদেশ প্রতিপালন না করিলে অর্থাৎ মহাপ্রভুকে উৎকলদেশে পৌঁছাইয়া না দিলে রামচন্দ্র খাঁন নাবিকের প্রাণ বিনাশ করিবেন; আবার উৎকলদেশে যাইবার পথে বিরোধিপক্ষের দৃষ্টিপথে পতিত হইবার আশঙ্কাও প্রচুর। কীর্তন করিতে করিতে নৌকায় গেলে বিরোধিদল কীর্তনধ্বনির অনুসরণে আক্রমণ করিবে। জলে নৌকার ভিতরে থাকিলেও ভয়, স্থলে উঠিলেও ভয়, এবং ডুবিলেও ভয়। রামচন্দ্র খানের ভয় এ বিরোধী রাজার ভয় এবং এতদ্ব্যতীত রামচন্দ্রের অনুগত জনগণের বিচার ভয়। ইঁহাদের কীর্তন কোলাহল শুনিয়া বিরোধী দল ও দস্যুসম্প্রদায় ইঁহাদের উপর আক্রমণ করিবে।