মহাভাগবত-লীল প্রভুর অবিরাম অবিচ্ছিন্নভাবে সর্বত্র কৃষ্ণ-দর্শন—
আমি যত-ক্ষণ ধরি’ দেখি জগন্নাথ।
আমার লোচন আর না যায় কোথাত।
শ্রীগৌরসুন্দর শ্রীজগন্নাথের অনুশীলন- কালে ভগবানের বদন নিরীক্ষণ করিতেন। শ্রীবিল্বমঙ্গল কৃষ্ণকর্ণামৃত গ্রন্থে মাধুর্য বর্ণনে বদন-শোভার মধুরিমা কীর্তন করিয়াছেন। সমগ্র বিগ্রহ-মাধুরী অপেক্ষা সমগ্র বদন-মাধুরী অধিকতর এবং সমগ্র বদন মাধুরী অপেক্ষা তাঁহার মৃদুহাস্য অধিকতম মধুর।
শ্রীগৌরসুন্দর ভগবানের অন্যান্য অঙ্গাদি দর্শনাপেক্ষা পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়-সমাবিষ্ট মুখমণ্ডলের আকর্ষণকত্ব বলিয়াছেন এবং ভগবৎ প্রসন্নতা-জ্ঞাপন তাঁহার মন্দহাস্য প্রবলতম সেবার বিজ্ঞাপক ও উদ্দীপক।
শ্রীঅদ্বৈতপ্রভু শ্রীজগন্নাথদেবের চতুঃপার্শ্বে পাঁচ সাতবার প্রদক্ষিণ করিলেন। তাঁহার লক্ষ্য বস্তু-শ্রীভগবৎকলেবর; কিন্তু শ্রীগৌরসুন্দরের অনুশীলনীয় বস্তু—শ্রীজগন্নাথদেবের মুখমণ্ডল। সুতরাং শ্রীগৌরসুন্দর অদ্বৈতপ্রভুকে প্রতিযোগিতায় হারাইয়া দিলেন জগন্নাথের পশ্চাদ্ভাগে পরিক্রমা কালীন অর্ধাংশ দর্শন—পৃষ্ঠদর্শন মাত্র; কিন্তু সম্মুখ দর্শনে পরস্পর দর্শন বিনিময়।