Normal view
Book Lang.: বাংলা
English
संस्कृता वाक्
Translation

কথাসার

Language: বাংলা
Language: English Translation
  • এই অধ্যায়ে প্রথমে পাঁচটী শ্লোকে মঙ্গলাচরণ; তন্মধ্যে প্রথম-শ্লোকে শ্রীচৈতন্য ও শ্রীনিত্যানন্দের একত্র বন্দনা, দ্বিতীয়-শ্লোকে কেবলমাত্র স্বয়ং ভগবান্ শ্রীচৈতন্যচন্দ্রের বন্দনা, তৃতীয়-শ্লোকে যশোদা-নন্দন শ্রীকৃষ্ণ ও রোহিণী নন্দ শ্রীবলরামই যে যথাক্রমে শ্রীচৈতন্য ও শ্রীনিত্যানন্দ, তদ্বিষয়ে গূঢ়োক্তি; চতুর্থ-শ্লোকে শ্রীচৈতন্যচন্দ্রের রূপ, গুণ ও লীলার জয়-গান, এবং পঞ্চম-শ্লোকে শ্রীচৈতন্যচন্দ্র ও তাঁহার করুণা-লীলার ন্যায় তদীয় ভক্ত ও ভক্ত-লীলারও জয় গীত হইয়াছে। গ্রন্থারম্ভে ভগবদ্ভক্ত-বন্দনা এবং ভগবৎপূজাপেক্ষা ভক্তপূজার শ্রেষ্ঠতা কথিত হইয়াছে। অতঃপর মূলসঙ্কৰ্ষণ শ্রীনিত্যানন্দ-বলদেবের বন্দনা করিতে গিয়া তিনি যে কেবলমাত্র গ্রন্থকারেরই গুরুদেব নহেন, পরন্তু তিনি যে স্বীয় সঙ্কর্ষণ বা অনন্তরূপে দশ-দেহে শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যের সেবা এবং ভূ-ধারী ‘শেষ’-রূপে, সহস্রমুখে অনুক্ষণ শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যের গুণ কীর্তন করিতেছেন, তিনি যে দেবদেব মহাদেবেরও উপাস্য, অতএব জগদ্‌গুরু এবং তাঁহারই কৃপা-বলেই যে জীব স্বীয় নিত্য-সেব্য শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যের সেবা লাভ করিতে সমর্থ, শ্রীকৃষ্ণের ন্যায় শ্রীবলরামের রাসলীলাও যে নিত্য, তৎসম্বন্ধে শ্রীমদ্ভাগবতের প্রমাণ দেখাইয়া পূর্বপক্ষীয় শাস্ত্রবিরুদ্ধ দুষ্টমত নিরসন করিলেন। সেই শ্রীবলদেব-প্রভুর তত্ত্ব বর্ণন করিতে গিয়া তিনি যে অভিন্ন-ব্রজেন্দ্রনন্দন হইয়াও সখা, ভ্রাতা, ব্যজন, শয্যা, গৃহ, ছত্র, বস্ত্র, ভূষণ ও আসন প্রভৃতি বিবিধরূপে ব্রজেন্দ্রনন্দনেরই সেবা করেন, তাহা বর্ণন করিলেন। সেই শ্রীনিত্যানন্দ-বলদেব-তত্ত্ব শ্রীগৌর-কৃষ্ণ-তত্ত্বের ন্যায় বিধি-মহেন্দ্রাদিরও দুয়ে। তিনি ‘শেষ’-রূপে পৃথিবী ধারণ এবং সহস্রবদনে শ্রীকৃষ্ণের যশঃ নিরন্তর কীর্তন করিতেছেন। শ্রীনিত্যানন্দপ্রভুই সেই শ্রীবলদেব, অথবা সেই মূল-সঙ্কৰ্ষণ শ্রীবলদেবই শ্রীনিত্যানন্দ। তাঁহার চরণাশ্রয় ব্যতীত জীবের সংসার-মোচন ও গৌর-কৃষ্ণ-সেবা-প্রাপ্তির আর দ্বিতীয় উপায় নাই। গ্রন্থকার স্বীয় ইষ্টদেব শ্রীনিত্যানন্দপ্রভুর আজ্ঞায় ও তদীয় অনুকম্পায় এই শ্রীচৈতন্যভাগবত (পূর্বনাম শ্রীচৈতন্যমঙ্গল) রচনা করিয়াছেন। তিনি এই রচনাকার্যে স্বীয় অহঙ্কার প্রকাশ না করিয়া দৈন্যোক্তি দ্বারা জানাইয়াছেন যে, মায়াবশ জীব নিজ-নিজ-চেষ্টায় মায়াধীশ ভগবত্তত্ত্ব বর্ণন করিতে অসমর্থ। শ্রীভগবান্ নিজগুণে কৃপা-পরবশ হইয়া শ্রীগুরুকৃপাপ্রাপ্ত জীব-হৃদয়ে স্বয়ং প্রকাশিত হন।

    এই গ্রন্থে শ্রীচৈতন্যলীলা তিনভাগে বর্ণিত হইয়াছেন—(১) বিদ্যাবিলাস-প্রধান ‘আদিখণ্ড’, (২) কীর্তনপ্রকাশ প্রধান ‘মধ্যখণ্ড’ এবং (৩) সন্ন্যাসিরূপে শ্রীনীলাচলে নামপ্রচার-প্রধান ‘অন্ত্যখণ্ড’। অতঃপর অধ্যায় শেষে তিনখণ্ডেরই বর্ণনীয় বিষয়গুলি সূত্ররূপে উল্লিখিত হইয়াছে। (গৌঃ ভাঃ)

Page execution time: 0.03724193573 sec