Normal view
Book Lang.: বাংলা
English
संस्कृता वाक्
Translation

শ্লোক ৩৮

Language: বাংলা
Language: English Translation
  • ভাগবতোক্ত বলরাম বা নিত্যানন্দ-মাহাত্ম্যে প্রীতিহীনঅবৈষ্ণব বা অভক্ত

    ভাগবত শুনি' যার রামে নাহি প্রীত
    বিষ্ণু-বৈষ্ণবের পথে সে জন-বর্জ্জিত ৩৮

    (ভাঃ ৬/১৬/৩৮ শ্লোকে শ্রীসন্ধর্ষণের প্রতি শ্ৰচিত্রকেতুর স্তবাক্তি—) “যে-সকল বিষয়তৃষ্ণা ফলভোগকামনা পরবশ নরপশু আপনার বিভূতি ইন্দ্রাদি দেবগণেরই উপাসনা করে, কিন্তু পরমেশ্বর আপনার উপাসনা করে না; হে ঈশ্বর! রাজকুলের বিনাশের সঙ্গে যেমন তৎসেবকগণেরও আশা ভরসা-কামনাদি বিনষ্ট হয়, তদ্রূপ সেই ইন্দ্রাদিদেবতার লয়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁহাদের উপাসকগণের আশা-ভরসাকামনাদি বিনষ্ট হয়।’’

    শ্রীমদ্ভাগবতে ১০ম স্কন্ধে ৩৪তম ও ৬৫ তম অধ্যায়ে এবং ৫ম স্কন্ধে ১৭শ ও ২৫শ অধ্যায়ে, ৬ষ্ঠ স্কন্ধে ১৬শ অধ্যায়ে সকল জীবের সেবা-তত্ত্ব শ্রীবলরামের বা সংকর্ষণের মহিমা প্রকাশিত হইয়াছে। তাঁহাতে যাহারা উদাসীন থাকে, তাহারা কখনও ভগবদ্ভক্তিমার্গে উন্নতি লাভ করিতে পারে না। তাহারা স্বীয় মনোধর্মোত্থ অক্ষজ-জ্ঞানবলে মায়িক বিচারক্রমে অপ্রাকৃত বিষ্ণুত্তত্ত্বের আকর-স্বরূপ শ্রীবলরাম বা সংকর্ষণতত্ত্বে প্রবেশ লাভ করিতে অসমর্থ।

    শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে এবিষয়ে সুন্দর সিদ্ধান্ত আছে, যথা আদি ৫ম পঃ-“গোবিন্দের প্রতি-মূর্তি —শ্রীবলরাম ॥ তাঁর এক-স্বরূপ শ্রীমহাসংকর্ষণ। জীব-নামক তটস্থাখ্য এক শক্তি হয়। মহাসংকর্ষণ —সর্বজীবের আশ্রয়॥ তাঁর অংশ ‘পুরুষ’ হয় ‘কলা’তে গণন। দূর হৈতে পুরুষ করেন মায়াতে অবধান। জীবরূপ বীর্য তা’তে করেন আধান॥ অংশের অংশ যেই, ‘কলা’ তাঁর নাম॥ যাহারে ত’ ‘কলা’ কহি, তেঁহো—মহাবিষ্ণু॥ মহাপুরুষ, অবতারী, তেঁহো সর্বজিষ্ণু। গর্ভোদ-ক্ষীরোদ-শায়ী, দোঁহে –‘পুরুষ’-নাম। সেই দুই—যাঁর অংশ-বিষ্ণু, বিশ্বধাম। সেই পুরুষ সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়ের কর্তা। নানা অবতার করেন, জগতের ভর্তা॥ সেই বিষ্ণু হয় যার অংশাংশের অংশ। সেই প্রভু নিত্যানন্দ—সর্ব-অবতংস। শ্রীচৈতন্য—সেই কৃষ্ণ, নিত্যানন্দ-রাম। নিত্যানন্দ পূর্ণ করে চৈতন্যের কাম॥... দুই ভাই—এক-তনু, সমান প্রকাশ। নিত্যানন্দ না মান’, তোমার হ’বে সর্বনাশ॥ একেতে বিশ্বাস, অন্যেরে না কর সম্মান। ‘অর্ধ-কুক্কুটী-ন্যায়’—তোমার প্রমাণ॥ কিংবা দোঁহে না মানি হও ত’ পাষণ্ড । একে মানি, আরে না মানি,—এইমত ভণ্ড॥’’

    বিবৃতি। যতদূর জীব জড়বদ্ধ থাকেন , ততদূরই তিনি সচ্চিদানন্দ-বৈষ্ণবের উপাস্য সচ্চিদানন্দ-বিগ্রহ শ্রীবিষ্ণুর উপাসনা পথের পথিক নহেন অর্থাৎ সচ্চিদানন্দত্ব অনুভব করিতে অসমর্থ। জীবাত্মার ঈশ্বর পুরুষাবতারত্রয়ের তত্ত্ব অবগত হইলেই জীব ঐ মায়া বা জড়গ্রস্তা বুদ্ধি হইতে মুক্তি লাভ করিতে পারেন অর্থাৎ জীব হৃদয়ে অপ্রাকৃত বুদ্ধির উদয় হইয়া জীবকে নিত্য-সত্য বৈষ্ণবের নিত্যেপাস্য সচ্চিদানন্দবিগ্রহ বিষ্ণুর উপাসনা-পথে অগ্রসর করায়। যথা সাত্বততন্ত্র-বাক্যে—“আদ্যন্তু মহতঃস্রষ্টৃ  দ্বিতীয়ন্ত্বন্ডু সংস্থিতম্‌ । তৃতীয়ং সর্বভূতস্থং তানি জ্ঞাত্বা বিমুচ্যতে॥’’৩৮॥

Page execution time: 0.0361511707306 sec