অনভিজ্ঞতা-মূলে শ্রীবলরামের রাসেসন্দেহ —
মূর্খ-দোষে কেহ কেহ না দেখি’ পুরাণ।
বলরাম-রাসক্রীড়া করে অপ্রমাণ ॥৩২॥
বেদে যাহা গুপ্ত,--সাত্বতপুরাণে তাহাই ব্যক্ত; সেই পুরাণের মাহাত্ম্য ও সার্থকতা সম্বন্ধে শ্রীল জীবগোস্বামি প্রভু-কৃত ষট্সন্দৰ্ভান্তর্গত ‘তত্ত্বসন্দর্ভে’ ১২-১৭ সংখ্যা দ্রষ্টব্য। মহাঃ ভাঃ আদি পঃ ১ম আঃ ২৬৭ শ্লোকে ‘ইতিহাস পুরাণাভ্যাং বেদ সমুপবৃংহয়েৎ’’; নারদীয়ে—“বেদার্থাদধিক মন্যে পুরাণার্থং বরাননে। বেদাঃ প্রতিষ্ঠিতাঃ সর্বে পুরাণে নাত্ৰ সংশয়ঃ ॥ পুরাণমন্যথা কৃত্বা তির্যগযোনিমবাপ্নুয়াৎ সুদান্তোঽপি সুশান্তোঽপি ন গতিং ক্কচিদাপ্নুয়াৎ ॥’’ স্কান্দে প্রভাসখণ্ডে---“বেদবন্নিশ্চলং মন্যে পুরাণাৰ্থ দ্বিজোত্তমাঃ। বেদাঃ প্রতিষ্ঠিতাঃ সর্বে পুরাণে নাত্রসংশয়ঃ ॥ বিভেত্যল্পশ্রুতাদ্বেদো মাময় চালয়িষ্যতি। ইতিহাস পুরাণৈস্তু নিশ্চলোঽয় কৃতঃ পুরা ॥ যন্ন দৃষ্টং হি বেদেষু তদৃষ্টং স্মৃতিষু দ্বিজাঃ। উভয়োর্যন দৃষ্টং হি তৎপুরাণৈঃ প্ৰগীয়তে॥ যো বেদ চতুরো বেদান্ সাঙ্গোপনিষদো দ্বিজাঃ । পুরাণং নৈব জানাতি ন স স্যাদবিচক্ষণঃ॥’’
শ্রীবলদেবের চরিত্র,—সকল সাত্বতপুরাণে, বিশেষতঃ শ্রীমদ্ভাগবতে ৫ম স্কন্ধে ১৬শ ও ২৫শ অধ্যায়ে, ৬ষ্ঠ স্কন্ধে ১৬শ অধ্যায়ে, ১০ম স্কন্ধে ৩৪ ও ৬৫ অধ্যায়ে এবং বিষ্ণু পুরাণে ৫ম অং ৯ম অঃ ২২-৩১শ শ্লোকে উল্লিখিত আছে॥
মূর্খ-দোষে,—মূর্খতা-দোষে; শাস্ত্রের সার বা তাৎপর্যোপলব্ধির অভাব হইলেই ‘মুখ’-সংজ্ঞা হয়। এস্থলে অধোক্ষজ বিষ্ণু- বৈমুখ্যক্রমে প্রাকৃতদম্ভবশে কোন কোন উপাধিগ্রস্ত জীব শ্রীমদ্ভাগবতাদি মহাপুরাণ আলোচনা না করিয়াই, অথবা নিগম কল্পতরুর প্রপক্কফল, নিরস্তকু্হক, পরমসত্যবস্তু-প্রতিপাদক শ্রীমদ্ভাগবতের সিদ্ধান্তে অর্থবাদাদি কল্পনাদ্বারা অপরাধ অর্জন করিবার নিমিত্ত শ্রীবলদেবের রাসক্রীড়া অস্বীকার করে। উহাদের সম্বন্ধে গ্রন্থকার ৩৮-৪১ সংখ্যায় যথার্থ মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছেন। যাহারা শ্রীবলদেবকে বিষয়বিগ্রহ-তত্ত্ব শ্রীবিষ্ণুতত্ত্ব বলিয়া না জানিয়া তাঁহার ভোক্তৃত্ব অপসরণ করিতে প্রয়াস পায়, তাহারা --অনভিজ্ঞতা-দোষে দুষ্ট॥৩২॥