Normal view
Book Lang.: বাংলা
English
संस्कृता वाक्
Translation

শ্লোক ১৮

Language: বাংলা
Language: English Translation
  • শ্রীনিত্যানন্দ-সঙ্কর্ষণের শুদ্ধ শ্রবণ-কীর্তনকারীর প্রতি শ্রীগৌর-কৃষ্ণের সন্তোষ

    তাঁহার চরিত্র যেবা জনে শুনে, গায়
    শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যতাঁর পরম সহায় ১৮

    (চৈঃ চঃ আদি ৫ ম পঃ ৪-৬ ও ৮-১১ সংখ্যায়)–“সর্ব অবতারী কৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান্ । তাঁহার দ্বিতীয়-দেহ শ্রীবলরাম॥ একই ‘স্বরূপ’ দোঁহে, ভিন্নমাত্র কায়। আদ্য-কায়-ব্যূহ, কৃষ্ণলীলার সহায়॥ সেই কৃষ্ণ-নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্যচন্দ্র। সেই বলরাম —সঙ্গে শ্রীনিত্যানন্দ॥’’ * “শ্রীবলরাম গোস্বাঞি-মূল-সঙ্কর্ষণ। পঞ্চরূপ ধরি’ করেন কৃষ্ণের সেবন॥ আপনে করেন কৃষ্ণলীলার সহায়। সৃষ্টিলীলা-কার্য করে ধরি’ চারি কায়। সৃষ্ট্যাদিক সে তাঁর আজ্ঞার পালন। ‘ শেষ’-রূপে করেন কৃষ্ণের বিবিধ-সেবন। সর্বরূপে আস্বাদয় কৃষ্ণসেবানন্দ। সেই বলরাম-গৌরসঙ্গে নিত্যানন্দ॥’’ (ঐ আদি ৫ম পঃ ১২০, ১২৪, ১৩৭ ও ১৫৬ সংখ্যায়)—“সেই ত’ ‘অনন্ত’ ‘শেষ’—ভক্ত-অবতার। ঈশ্বরের সেবা বিনা নাহি জানে আর॥’’ ** “এত মূর্তি ভেদ করি’ কৃষ্ণ-সেবা করে। কৃষ্ণের ‘শেষতা’ পাঞা ‘শেষ’ নাম ধরে॥’’ * * “আপনাকে ‘ভৃত্য’ করি’ কৃষ্ণে ‘প্রভু’ জানে। কৃষ্ণের ‘কলার কলা’ আপনাকে মানে॥’’ ** “শ্রীচৈতন্য--সেই কৃষ্ণ, শ্রীনিত্যানন্দ-রাম। নিত্যানন্দ পূর্ণ করেন, চৈতন্যের কাম ॥’’

    জ্ঞাতব্য এই যে, শ্রীনিত্যানন্দ-সঙ্কৰ্ষণপ্রভু স্বয়ং বিষ্ণুপরতত্ত্ববস্তু; সুতরাং সমান— ধর্মবশতঃ স্বয়ংরূপ শ্রীকৃষ্ণেরই প্রকাশবিশেষ; অর্থাৎ সমগ্রচিৎসত্তা-বিস্তারিণী বা শুদ্ধসত্ত্বপ্রাকট্যবিধায়িনী সন্ধিানীশক্তিমদ্বিগ্রহই নিত্যানন্দ-বলরাম॥।

    মধ্যখণ্ড ১২ শ অঃ ৫৩-৫৬ সংখ্যায়—“প্রভু বলে, এই নিত্যানন্দস্বরূপেরে। যে করয়ে ভক্তি শ্রদ্ধা, সে করে আমারে॥ ইহান চরণ—শিবব্রহ্মার বন্দিত। অতএব ইহানে করিহ সভে প্রীত॥তিলার্ধেক ইহানে যা’র দ্বেষ রহে। ভক্ত হইলেও সে মোর “প্রিয়’ নহে॥ ইহান বাতাস লাগিবেক যা’র গায়॥ তারেহ কৃষ্ণ না ছাড়িব সর্বথায়॥’’

    শ্রীনিত্যানন্দ-রাম বা সঙ্কর্ষণের গুণাবলী শ্রবণ বা কীর্তনকারীর মাহাত্ম্য (ভা ৫/১৭/১৮-১৯ শ্লোকে)—“ভজে...কস্তং ন মন্যেত জিগীষুরাত্মনঃ’’; ৫।২৫/৮ শ্লোকে—“য এষ এবমনু শ্রুতোঽভিধ্যায়মানো মুমুক্ষুণামনাদিকাল কর্মবাসনাগ্রথিতমবিদ্যাময়ং  হৃদয়গ্রন্থিং সত্ত্ব-রজস্তমোময়মন্তর্হৃদয়ং গত আশুনির্ভিত্তি’’ অর্থাৎ যে সকল মুমুক্ষু (স্বরূপসিদ্ধিলাভেচ্ছু) ব্যক্তি শ্রীগুরুমুখে শ্ৰীঅনন্তের উক্তপ্রকার গুণচরিত শ্রবণ করিয়া সর্বতোভাবে তাঁহার ধ্যান করেন, তিনি তাঁহাদের সত্ত্বরজস্তমোগুণময় হৃদয়ের অভ্যন্তরে প্রবিষ্ট হইয়া অনাদিকালসঞ্চিত কৰ্মবাসনাজনিত অবিদ্যাময় হৃদয়গ্রন্থিরূপ সংসার শীঘ্রই ছেদন অর্থাৎ বিনাশ করিয়া ফেলেন। ভাঃ ৫/২৫/১১ শ্লোক (পরবর্তী মূলের ৫ ৫ সংখ্যা) দ্রষ্টব্য॥

    (ভাঃ ৬/১৬ ৩৪ ও ৪৪ শ্লোকে শ্রীসঙ্কর্ষণের প্রতি শ্ৰীচিত্রকেতুর স্তব—) *অজিত জিতঃ সমমতিভিঃ সাধুভির্ভবান্‌ জিতাত্মআভির্ভবতা। বিজিতাস্তেঽপি চ ভজতামকামাত্মানাং য আত্মদোঽতি করুণঃ॥’’ ** “ন হি ভগবন্নঘটিতমিদং ত্বদ্দর্শনান্‌নৃণামখিলপাপক্ষয়ঃ । যন্নাম সকৃচ্ছ্রবণাৎ পুক্কশোঽপি বিমুচ্যতে সংসারাৎ॥’’

    অর্থাৎ হে ভগবান্ অজিত, অন্য কাহারও কর্তৃক আপনি পরাজিত না হইলেও সর্বত্র সমবুদ্ধি, জিতেন্দ্রিয় সাধুভক্তগণ আপনাকে জয় করিয়া স্বীয় অধীন করিয়া ফেলিয়াছেন, কেননা, আপনি—অতিশয় করুণ; আর তাঁহারা নিষ্কাম হইয়াও আপনা কর্তৃকই বিজিত, কেননা, আপনি নিষ্কামচিত্ত ভক্তগণকেই আত্মদান করিয়া থাকেন। হে ভগবন্! আপনার দর্শনফলেই মানবগণের যে সর্বপাপক্ষয় হইবে, —ইহা কিছু বিচিত্র নহে; কেননা, (আপনার দর্শন  দরে থাকুক,) আমার নাম একবার মাত্র শ্রবণ করিয়া পুক্কশও (চণ্ডালও) সংসারবন্ধন হইতে বিমুক্ত হয়।

Page execution time: 0.042228937149 sec