(৫) নিত্যানন্দ-কর্তৃক প্রভুদণ্ড-ভঙ্গ —
শেষখণ্ডে, নিত্যানন্দ চৈতন্যের দণ্ড।
ভাঙ্গিলেন, বলরাম, পরম প্রচণ্ড ॥
দণ্ড,—যাঁহারা চতুর্থাশ্রম গ্রহণ করেন, বৈদিক-অনুষ্ঠানে তাঁহাদের করে দণ্ডধারণ বিহিত আছে। পুরাকালে ত্রিদণ্ডধারণই বৈদিক-অনুষ্ঠানের একমাত্র কৃত্য ছিল; পরে দণ্ডত্রয় একত্রিত করিয়া একদণ্ড-ধারণের ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। অদ্বৈতবাদের আনুষ্ঠানিক কার্যরূপেই একদণ্ড শ্ৰৌতানুষ্ঠানের অনুর্ভুক্ত হইয়াছে।
ত্রিদণ্ডের সহিত জীবনদণ্ড সংযোগে দণ্ডচতুষ্টয়ের সম্মেলন শুদ্ধাদ্বৈতবাদ, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ ও দ্বৈতাদ্বৈতবাদ, বিচারয় সমর্থন করিয়াছেন। যেকালে শুদ্ধাদ্বৈত-মত বিদ্ধাদ্বৈতমতে পর্যবসিত হয়, তৎকালেই ত্রিদণ্ডগ্রহণ-পন্থা একদণ্ডে পরিণত হয়। বৈদিক ত্রিদণ্ডিগণের যতিনামসমূহের প্রধান দশটী নামই কেবলাদ্বৈত বা বিদ্ধাদ্বৈতসম্প্রদায়ে সংরক্ষিত হইয়াছে। শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু বৈদিক দশনামীর অন্যতম ভারতীনামক শঙ্কর সম্প্রদায়কে পবিত্র করিলেন। পরে শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু শ্ৰীমন্মহাপ্রভুর শঙ্কর সম্প্রদায়ের আনুগত্যাভিনয়-চিহ্ন একদণ্ডকে ত্রিখণ্ডিত করিয়া অর্ণবয়ে নিক্ষেপ করিয়াছিলেন; তদ্দারা জগৎকে একদণ্ড-গ্রহণ পন্থা হইতে ত্রিদণ্ড গ্রহণ পন্থাই যে ভক্তির অনুকূল, তাহা দেখাইয়াছিলেন।