নিত্যানন্দ বা বলরামের অলৌকিক গৌরকৃষ্ণ-দাস্য-চেষ্টা —
সহস্রেক-ফণাধর প্রভু-বলরাম।
যতেক করয়ে প্রভু, সকল-উদ্দাম ॥১৫॥
সহস্রেক-ফণাধার,—(ভাঃ৫/১৭/২১ শ্লোকে শ্ৰীসঙ্কর্ষণের প্রতি রুদ্রের স্তবোক্তি) “যমাহুরস্য স্থিতি-জন্ম-সংযমং ত্রিভির্বিহীনং যমনন্তমৃষয়ঃ । ন বেদ সিদ্ধার্থমিব ক্বচিৎ স্থিতং তূমণ্ডলং মূর্ধসহস্রধামসু ॥
অর্থাৎ (দিব্যদ্রষ্টা) ঋষিগণ যাঁহাকে বিশ্বের সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের কারণ অথচ গুণত্রয়রহিত বলিয়া ‘অনন্ত’ নামে অভিহিত করেন, সেই অনন্তদেবের সহস্রফণারূপ স্বীয় ধামের একদেশে একটি সর্ষপের ন্যায় যে ভূমণ্ডল অবস্থিত, তাহা যাঁহার গণনার মধ্যেই আসে না, সেই ভগবান্ শ্রীঅনন্তদেবকে কেই বা পূজা না করিবে?
(ভা ৫/২৫/২য় শ্লোকে শ্রীপরীক্ষিতের প্রতি শ্ৰীশুকের উক্তি—) “যস্যেদং ক্ষিতিমণ্ডলং ভগবতোঽনন্তমূর্তেঃ সহস্রশিরস একস্মিন্নেব শীর্ষণি ধ্রিয়মাণং সিদ্ধার্থ ইব লক্ষ্যতে।’’
অর্থাৎ সেই সহস্ৰশীর্ষা অনন্তমূর্তি ভগবানের একটী ফণায় ধৃত হইয়া এই ক্ষিতিমণ্ডল একটী সর্ষপের ন্যায় লক্ষিত হইতেছে।
ঐ অধ্যায়েরই ১২ ও ১৩শ শ্লোকদ্বয় (পরবর্তী মূল ৫৬ ও ৫৭ সংখ্যা) দ্রষ্টব্য॥ (ভাঃ ৬/১৬/৪৮ শ্লোকে শ্রীসন্ধর্ষণের প্রতি চিত্রকেতুর স্তবোক্তি—) “ভূমণ্ডলং সর্ষপায়তি তস্মৈ নমো ভাগবতেঽস্তু সহস্ৰমূর্ধ্নে ’’ অর্থাৎ যাঁহার শিরোদেশে এই বিস্তীর্ণ ভূমণ্ডল সর্ষপতুল্য অবস্থিত, সেই সহস্ৰশীর্ষা ভগবান্ অনন্তদেবকে প্রণাম॥
উদ্দাম, —স্বতন্ত্র বা স্বেচ্ছাচালিত; অতিশয় প্রবল; (ভাঃ ৫।১৭/১৭-২৪, ৫/২৮/১-১৩ এবং ৬/১৬/৩৪-৪৮ শ্লোক দ্রষ্টব্য)।
হলধর,ভাঃ ৫/২৫/৭ শ্লোকে পরীক্ষিতের নিকট শ্ৰীশুকদেবের পাতালতলাধীশ্বর পৃথ্বীধারী শ্ৰীঅনন্তদেবের রূপবর্ণন)। “* * নীলবাসা এককুণ্ডলো হলককুদি কৃতসুভগসুন্দরভুজঃ’’ অর্থাৎ পৃথ্বীধারী শ্রীশেষের পরিধানে নীলবসন, কর্ণে এক কুণ্ডল এবং (স্বীয় আয়ুধ) হলটী এরূপভাবে ধৃত যে, উহার পৃষ্ট-ভাগে তাঁহার সুন্দর রম্য বাহু সুবিন্যস্ত।’’
লঘুভাগবতামৃতে (পূঃ খঃ প্রাভববৈভববর্ণন-প্রসঙ্গে ৬২ সংখ্যায়) “এ তেস্যৈবাংশভূতোঽয়ং পাতালে বসতি স্বয়ম্। নিত্যং তালধ্বজো বাগ্মী বনমালা-বিভূষিতঃ॥ ধারয়ন্ শিরসা নিত্যং রত্নচিত্ৰাং ফণাবলীম্ । লাঙ্গলী মুষলী খড়গী নীলাম্বর বিভূষিতঃ ’’।