বৈষ্ণব যে-কোন কুলোদ্ভূত হইলেও সর্বশ্রেষ্ঠ, তৎপ্রমাণ—
অবরকুলোদ্ভূত হরিদাসের ব্রহ্মাদির দুষ্প্রাপ্যবস্তু লাভ—
যে তে কুলে বৈষ্ণবের জন্ম কেনে নহে।
তথাপিহ সর্বোত্তম সর্বশাস্ত্রে কহে ॥১০০॥
বিষ্ণু-সেবায় প্রীতিযুক্ত ব্যক্তি যে কোন বংশে জন্মগ্রহণ করুন না কেন, তাহাতে কিছু ভক্তির ত্রুটী হয় না। সকল শাস্ত্রই বৈষ্ণবকে জাতি-কুল-ক্রিয়া-ধনমদে মত্ত ব্যক্তি অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ’ জানেন । জীবের নিত্য-প্রয়োজনীয়-বস্তু কৃষ্ণপ্রেমা। সেই প্রেমে অধিকার হইলে জাগতিক বিচারের নীচতা, স্বল্পতা ও বিপর্যয় অন্তরায় হয় না।
“যন্নামধেয়শ্রবণানুকীর্তনাদ্ যৎ প্রহ্বণাদ্যৎস্মরণাদপি ক্বচিৎ।
শ্বাদোঽপি সদ্যঃ সবনায় কল্পতে কুতঃ পুনস্তে ভগবন্নুদর্শনাৎ ॥
অহো বত শ্বপচোঽতো গরীয়ান্ যজ্জিহ্বাগ্রে বৰ্ততে নাম তুভ্যম্।
তেপুস্তপস্তে জুহুবুঃ সস্নরার্যা ব্রহ্মানূচূর্নাম গৃণন্তি যে তে॥’’
(—ভাঃ ৩/৩৩/৬-৭ ),
“নহি ভগবন্নঘটিতমিদং ত্বদ্দর্শনান্নৃণামখিলপাপক্ষয়ঃ
যন্নামসকৃচ্ছ্রেবণাৎ পুক্কশোঽপি বিমুচ্যতে সংসারাৎ॥’’
(ভাঃ ৬১৬ |৪৪),
“মন্যে ধনাভিজনরূপতপঃশ্রুতৌজস্তেজঃপ্রভাববলপৌরুষবুদ্ধিযোগাঃ ।
নারাধনায় হি ভবন্তি পুরস্য পুংসো ভক্ত্যা তুতোষ ভগবান্ গজযুথপায় ॥’’
(ভাঃ ৭/৯/৯),
‘ন মেঽভক্তশ্চতুর্বেদী মদ্ভক্তঃ শ্বপচঃ প্রিয়ঃ ।
তস্মৈ দেয়ং ততো গ্রাহ্যং স চ পূজ্যো যথা হ্যহম্॥’’
(হঃ ভঃ বিঃ ১০/৯১),
“পুক্বশঃ শ্বপচো বাপি যে চান্যে স্লেচ্ছজাতয়ঃ ।
তেঽপি বন্দ্যা মহাভাগা হরিপাদৈকসেবকাঃ॥’’
(পদ্মপুরাণ-সর্গখণ্ড আঃ ২৪শ অঃ),
“বিষ্ণোরয়ং যতোহ্যাসীত্তস্মাদ্বৈষ্ণব উচ্যতে।
সবের্ষাং চৈব বর্ণানাং বৈষ্ণবঃ শ্রেষ্ঠ উচ্যতে॥’’
(পাদ্মোত্তর-খণ্ডে ৩৯শ অঃ),
“অহো বয়ং জন্মভৃতোঽদ্য হাস্ম বৃদ্ধানু-বৃত্ত্যাপি বিলোমজাতাঃ।
দৌস্কুল্যমাধিং বিধুনোতি শীঘ্রং মহত্তমানামভিধানযোগঃ।
কুতঃ পুনর্গৃণতো নাম তস্য মহত্তমৈকান্তপরায়ণস্য।
যোঽনন্তশক্তিৰ্ভগবাননন্তো মহদ্গুণত্বাদ্যমনন্তমাহু ॥’’
(ভাঃ ১/১৮/১৮-১৯),
“আরাধনানাং সর্বেষাং বিষ্ণুরারাধনং পরম্।
তস্মাৎ পরতরং দেবি তদীয়ানাং সমৰ্চনম্ ॥’’
(পদ্মপুরাণ), “ব্রাহ্মণঃ ক্ষত্রিয়ো বৈশ্যঃ শূদ্রো বা যদিবেতরঃ।
বিষ্ণুভক্তিসমাযুক্তো জ্ঞেয়ঃ সর্বোত্তামোত্তমঃ ॥’’
(—কাশীখণ্ড), “শ্বপচোঽপি মহীপাল বিষ্ণুভক্তো দ্বিজাধিকঃ ।
বিষ্ণুভক্তিবিহীনো যো যতিশ্চ শ্বপচাধিকঃ ॥’’
(—নারদীয়-পুরাণ),
“ভক্ত্যাঽমেকয়া গ্রাহ্যঃ শ্ৰদ্ধয়াত্মা প্রিয়ঃ সতাম্।
ভক্তিঃ পুনাতি মন্নিষ্ঠা শ্বপাকানপি সম্ভবাৎ॥’’
(ভাঃ ১১/১৪/২১),
“ কিরাতহূনান্ধ্রপলিন্দপুক্বশা আভীরশুহ্মা যবনাঃ খশাদয়ঃ ।
যেঽন্যে চ পাপা যদুপাশ্ৰয়াশ্রয়াঃ শুধ্যন্তি তস্মৈ প্রভবিষ্ণবে নমঃ॥
(ভাঃ ২|৪|১৮),
“নীচজাতি নহে কৃষ্ণ-ভজনে অযোগ্য।
সৎকুলবিপ্র নহে ভজনের যোগ্য॥
যেই ভজে, সেই বড়, অভক্ত হীন, ছার।
কৃষ্ণভজনে নাহি জাতি কুলাদি বিচার॥’’
(চৈঃ চঃ অ ৪/৬৬-৬৭),
“সংকীর্ণযোনয়ঃ পূতাঃ যে ভক্তা মধুসূদনে।
ম্লেচ্ছতুল্যা কুলীনাস্তে যে ন ভক্তা জনার্দনে॥’’
(দ্বারকামাহাত্ম্যে)।